ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করেছে সৌদি আরব
![]() |
সোর্স : গুগল |
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে আলোচনা স্থগিত করেছে সৌদি আরব। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধের জেরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে একটি বড় আকারের আক্রমণ শুরু করে, যাতে প্রায় এক হাজার ৩০০ মানুষ নিহত হয়। অন্যদিকে প্রতিশোধমূলক ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় দুই হাজার ২০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আলোচনার সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, ‘সৌদি আরব সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে আলোচনা থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে।’
সম্ভাব্য এই চুক্তির ব্যাপারে গত মাসে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, প্রতিদিন আমদের মধ্যে দূরত্ব কমছে। তবে তিনি এটাও জানিয়ে দেন যে ফিলিস্তিন ইস্যু তাদের কাছে 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ'। তিনি বলেন, আমাদেরকে ওই অংশটার সমাধান করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের জীবনকে আমাদের স্বাভাবিক করতে হবে।
সেই প্রেইক্ষিতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে রিয়াদ ওয়াশিংটন থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়নে সহায়তাসহ শর্ত তৈরি করেছিল।
গত মাসে ফক্স নিউজের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আমরা প্রতিনিয়তই কাছাকাছি যাচ্ছি।’ সেই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুটি রিয়াদের জন্য ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’, যা সমাধান করতে হবে এবং ফিলিস্তিনিদের জীবন সহজ করতে হবে। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন শনিবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আলোচনা এখন আটকে গেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
হামাস ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ শুরু করার সপ্তাহে রিয়াদ হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েল ওই অঞ্চলে হাজার হাজার হামলা চালিয়েছে এবং অঞ্চলটির বাসিন্দাদের উত্তর থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
‘চলমান উত্তেজনা বন্ধ করতে’ সৌদি আরব কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও চালিয়েছে, অঞ্চলজুড়ে ও বাইরে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বৃহস্পতিবার সৌদি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুবরাজ মোহাম্মদ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে ‘গাজা ও এর বর্তমান সামরিক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সাত বছরের বিরতিতে মার্চ মাসে ইরান ও সৌদি আরব চীনের মধ্যস্থতায় সম্পর্ক স্থাপনের পর এই দুই নেতার মধ্যে এটি প্রথম ফোনালাপ ছিল।
এ ছাড়াও শুক্রবার সৌদি আরব গাজার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতি ও বেসামরিকদের ওপর আক্রমণের নিন্দা করেছে, যা ছিল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের সমালোচনা করা দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী ভাষা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রিয়াদ ‘গাজা থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার আহ্বানকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সেখানে প্রতিরক্ষাহীন বেসামরিকদের অব্যাহত লক্ষ্যবস্তুর নিন্দা জানাচ্ছে।’
বৈঠকে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর নিশ্চয়তা চান প্রিন্স ফয়সাল। একই সঙ্গে যেকোনো পক্ষেরই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করাটা সৌদি আরব প্রত্যাখ্যান করে বলে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
সূত্র : এএফপি/কালেরকন্ঠ
No comments