কুমিল্লা শিবমন্দিরে মনসাপূজা অনুষ্ঠিত
কুমিল্লা প্রতিনিধি: শুক্রবার (১৮ আগস্ট ২০২৩) দুপুরবেলা সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা পুলিশলাইন শিব মন্দিরেও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আনন্দঘন পরিবেশে শ্রী শ্রী মনসাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশনেন সনাতন ধর্মালম্বী প্রায় সহস্রাধিক পুর্ণ্যাথী।
জানা যায়- ভাদ্রমাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিতেও মনসাপূজার বিধান আছে । বর্তমানে সর্বজনীনভাবে মনসাদেবীর মন্দিরে মনসাপূজা করা হয়। আবার পারিবারিক পর্যায়ে পারিবারিক মন্দিরেও মনসাদেবীর পূজা হয়। প্রধানত সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে বা সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে মনসার পূজা করা হয়।
এদিকে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার আইটি সম্পাদক এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন- শ্রী মনসা সর্পের দেবী। দেবাদিদেব শিবের কন্যা। স্বর্গের দেবতারা মনসাকে দেবতা হিসেবে মানতে রাজি ছিলেন না। অবশেষে সকল দেবতা বলেন চম্পক নগরের চাঁদ সওদাগর যদি মনসাকে পূজা করেন তবে তিনি দেবতা হিসেবে স্বর্গে পরিচিত লাভ করবেন। দেবী মনসা তখন চম্পক নগরে গিয়ে চাঁদ সওদাগরকে তার পূজা করতে বলনে। চাঁদ সওদাগর ছিলেন শিবের একনিষ্ঠ ভক্ত। তিনি মনসাকে জানিয়ে দেন যেহাতে আমি তোমার পিতার পূজা করি সেহাতে তোমার পূজা করতে পারবো না। মনসা তাঁকে অনুরোধ করলেন কিন্তু চাঁদ সওদাগর তাঁর কথা শুনলেন না বরংতার উপর ক্ষিপ্ত হলেন। এ ঘটনায় চাঁদ সওদাগর মা মনসার কোপে পড়েন। সপ্ততরী ও ছয় সন্তানকে সাগরে তলিয়ে দেন। এতে তিনি নিজে প্রাণে রক্ষা পেলেও ছয় পুত্রের মৃত্যু হয়। অনেকদিন পর চাঁদ সওদাগর চম্পক নগরে ফিরে এসে দেখেন লক্ষিন্দর নামে তাঁর আরেক পুত্রের জন্ম হয়েছে।
উপযুক্ত বয়সে বেহুলার সঙ্গে লক্ষিন্দরের বিবাহ দিলেন। বাসর রাতেই লক্ষিন্দরকে কাল সাপে দংশন করে। সতী বেহুলা অযুতযোজন পথ বেলায় ভাসিয়ে স্বর্গে গিয়ে দেবতাদের তুষ্ট করেন। শিব মনসাকে স্বর্গে ডেকে নিয়ে বেহুলার স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে দিতে আদেশ দেন। এবারো বেকে বসেন দেবী মনসা। তিনি চাঁদ সওদাগরের পূজা পেতে বেহুলাকে শর্ত দেন। বেহুলা মনসাকে কথা দেন, তাঁর স্বামীর জীবন ফিরিয়ে দিলে তিনি তার শ্বশুরকে দিয়ে মনসার পূজা দেবেন। মা মনসা চাঁদ সওদাগর এর সাত পুত্রের জীবন ফিরিয়ে দেন। অবশেষে বেহুলা চম্পনগরে এসে তার শ্বশুর চাঁদ সওদাগরকে মা মনসার পূজা করতে বলেন। চাঁদ সওদাগর তখন তার বাম হাত দ্বারা মা মনসার চরণে ফুল নিবেদন করেন। কথিত আছে সেই থেকে মা মনসা দেবীর পূজা আরম্ভ হয়েছে প্রতি বছর ঘরে ঘরে।
No comments