চিরকুটে বড় ভাই ও ভাবীকে দায়ী করে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা - Sokalerkotha -->

Breaking News

চিরকুটে বড় ভাই ও ভাবীকে দায়ী করে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

মো: সাহেব আলী, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: চিরকুটে বড়ভাই ও ভাবীকে নিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে নিজ দোকানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন প্রদীপ কুমাব দেব (৪৫) নামের একজন ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার (২৬শে সেপ্টেম্বর) বিকাল আনুমানিক ৫টায় চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সরিষাকোল বাজারে। প্রদীপ কুমার ওই বাজারের প্রদীপ স্টোরের মালিক ও দুর্গাদহ গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন দেবের ছেলে।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রদীপ কুমারের সাথে তার বড়ভাই মনমোহন কুমার দেবের সাথে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল এবং তার বড়ভাই মনমোহন কুমার নিজে ও এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় প্রদীপ কুমারের বসত ঘর ভাঙার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছিল।

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় প্রদীপ কুমার বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশ্যে বের হন। দুপুরে খাবার খেতে বাড়ি না যাওয়ায় স্বজনেরা তার খোঁজ নেয়ার চেষ্ঠা করেও ব্যর্থ হন। পরে বিকাল আনুমানিক ৫টায় জনৈক ব্যক্তি প্রদীপ কুমারের দোকানের সাটার বন্ধ দেখতে পান, এসময় সাটারে তালা লাগানো ছিলনা।  পরে তিনি সাটার তুলে দোকানে প্রবেশ করে দোকান ঘরের ভেতরের সিড়ির উপরে প্রদীপ কুমারের ঝুলতে দেহ দেখতে পান। এসময় তার ডাকাডাকিতে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ভিড় জমায়।

খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার এসআই আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে প্রদীপ কুমারের ঝুলন্ত দেহ নামানো হয়। এসময় প্রদীপ কুমারের পরিহীত সার্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, সেখানে ”আমার মৃত্যুর জন্য বড় ভাই ও ভাবি দায়ী” একই কথা মোট আটবার লেখা ছিল। এসময় সেই লেখার নিচে প্রদীপ কুমারের স্বাক্ষর দেয়া ছিল। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মৃধা।

প্রদীপ কুমারের স্ত্রী চম্পা রানী অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাসুর ও তার স্ত্রী ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাদের ঘর ভাঙ্গার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিল। এই কারণে আমার স্বামী মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিল, তাদের অত্যাচারে তিনি রাতে ঘুমাতেও পারতেন না। তাদের অত্যাচারের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এই ঘটনায় শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, প্রদীপ কুমার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণগ্রস্থ্য হয়ে পড়েন এতে তার সপ্তাহে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা কিস্তি দিতো হতো। সেই সাথে তাদের এজমালি বাড়ির বাটোয়ারার কারণে তার বসতঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সড়ানোর কথা ছিল। এই বিষয়গুলো নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়ার কারণে অভিমানে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, তার পকেটে যে চিরকুট পাওয়া গেছে বড় ভাই ও ভাবিকে অভিযুক্ত করে সেই রকম কোন ঘটনার প্রমাণ আমরা পাইনি। নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে, আগামীকাল ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

No comments