-->

Breaking News

যাত্রীবাহী বাস ডাকাতি ঘটনার সাথে জড়িত ০৬ জন গ্রেফতার

আবু মাসুম, সিরাজগঞ্জ (তাড়াশ)প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দেশের সংকটকালীন মূহুর্তে জনগণের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ পুলিশ কখনো পিছপা হয় না। সেই লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ হত্যাকান্ড, সংঘবদ্ধ ডাকাতিসহ চাঞ্চল্যকর যে কোন ঘটনায় দ্রুত সাড়া দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার নিশ্চিতকল্পে সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) মহোদয় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।  

গত ৩০/০৯/২০২২ খ্রিঃ তারিখে রাত্রি অনুমান ২০.৩০ ঘটিকার সময় ন্যাশনাল ট্রাভেলস এর একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা মহাখালী হতে যাত্রী নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। পথিমধ্যে বাইপাইল হতে ০৬ জন যাত্রী (টিকিট ব্যতীত) জনপ্রতি ২৫০/-টাকা ভাড়ায় হাটিকুমরুল গোলচত্বরে যাওয়ার জন্য বাসে উঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পরপরই যাত্রীবেশী অজ্ঞাতনামা ৬ জন ডাকাত বাসের চালককে ছুরিকাঘাত করে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং হেলপার, সুপারভাইজার ও বাসের যাত্রীদের মারপিট ও হত্যার হুমকী প্রদান করে তাদেরকে জিম্মি করে। অতঃপর ডাকাতরা বাসে থাকা যাত্রীদের নিকট হতে ১৭টি মোবাইল ফোন ও নগদ ২,১৫,০০০/- টাকা লুন্ঠন করে। এরপর ডাকাতরা বাসটি প্রথমে বগুড়ার দিকে যায় এবং সলঙ্গা থানাধীন ঘোরকা এলাকা থেকে ইউর্টান করে সিরাজগঞ্জ রোডের দিকে চলে আসে। হাটিকুমরুল গোলচত্বরে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল বাসটিকে থামানোর চেষ্টা করলে ডাকাতরা পুলিশের বেরিকেট উপেক্ষা করে দ্রুত গতিতে গাড়ী চালিয়ে পাবনা জেলার পথে রওনা হয়। ০১/১০/২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাত্রি অনুমান ০৩.০৫ ঘটিকার সময় বাসটি উল্লাপাড়া মডেল থানাধীন উল্লাপাড়া রেলগেইটের নিকট পৌঁছালে ট্রেনের সিগনাল পড়ায় রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় এবং ডাকাতরা সেখানে বাসটি রেখে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় গত ০৩/১০/২০২২ খ্রিঃ তারিখে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে একটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়। 

চাঞ্চল্যকর এই বাস ডাকাতির ঘটনাটি দেশব্যাপি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) মহোদয় এই ডাকাতি সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্তে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। জনাব মোঃ নূর আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), জনাব মোঃ মাহ্ফুজ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), উল্লাপাড়া সার্কেল, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের চৌকস টিমকে সার্বিক দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। চৌকস এই টিমের দূরদর্শী কার্যক্রম এবং সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিবিড় তত্বাবধানের কারণে ডাকাতির সহিত জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্তপূর্বক মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় ও দৌলতপুর থানা এলাকা, ঢাকা জেলার সাভার ও আশুলিয়া থানা এলাকায় নিদ্রাহীন, বিরামহীন ও নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত ১। মোঃ আলমগীর শেখ(৩২), পিতা-মোঃ খোরশেদ শেখ, সাং-বড়লাউতারা(আমতলী), থানা-দৌলতপুর, জেলা-মানিকগঞ্জ ২। মোঃ সাদেক মাতব্বর @ সানি(৩০), পিতা-মোঃ গফুর মাতব্বর, সাং-শঙ্করপাশা, থানা-নগরকান্দা, জেলা-ফরিদপুর ৩। মোঃ সাইফুল ইসলাম(২২), পিতা-মোঃ মোস্তফা কামাল, সাং-জাফরগঞ্জ, থানা-শিবালয়, জেলা-মানিকগঞ্জ ৪। মোঃ রাজিব হোসেন(২৩), পিতা-মোঃ আলাউদ্দিন আলম, সাং-কলমা পূর্বপাড়া, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা ৫। মোঃ জাহিদ মোল্লা(৪০), পিতা-মোঃ আঃ সালাম মোল্লা, সাং-আলোকদিয়ার চর খাসপাড়া, থানা-শিবালয়, জেলা-মানিকগঞ্জ ৬। মোঃ শরিফ মোল্লা(২৩), পিতা-মোঃ হাকিম মোল্লা, সাং-বড়লাউতারা, থানা-দৌলতপুর, জেলা-মানিকগঞ্জগণদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আন্তঃজেলা ডাকাতদের নিকট হতে ডাকাতি হওয়া ১৭টি মোবাইল  ফোন, ডাকাতদের অস্ত্র বহনের ব্যাগ-০১টি ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ০৫(পাঁচ)টি ছুরি উদ্ধার করেন। 

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সার্বিক আইনানুগ প্রস্তুতি শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। 

মিডিয়া ব্রিফে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, ওসি ডিবি, ডিআইও-১, ওসি উল্লাপাড়া থানাসহ ডিবি ও উল্লাপাড়া থানার চৌকস টিমের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

No comments