দেবীদ্বারে পুলিশের বিরুদ্ধে টোকেন বাণিজ্যের অভিযোগ, চালকদের বিক্ষোভ - Sokalerkotha -->

Breaking News

দেবীদ্বারে পুলিশের বিরুদ্ধে টোকেন বাণিজ্যের অভিযোগ, চালকদের বিক্ষোভ

তাপস চন্দ্র সরকার, কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার দেবীদ্বারে ট্রাফিক, থানা ও সার্কেল পুলিশের টোকেন বাণিজ্যের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে দেবীদ্বার এএসপি (সার্কেল) অফিস ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা।

রবিবার (১ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পযর্ন্ত দেবীদ্বার হতে চান্দিনা সড়কের পাশে সাহেব বাড়িতে অবস্থিত দেবীদ্বার এএসপি (সার্কেল) অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন এ সড়কের চলাচল করা সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা।

ঘটনার বিষয়ে অটোরিকশা চালক নাজমুল জানান- সকাল সাড়ে ১০টার সময় একটি সিজারের রোগী নিয়ে দেবীদ্বার ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথে দেবীদ্বার সার্কেল এএসপি অফিসের সামনে ট্রাফিক সার্জেন্ট মুজাহিদুল আমার গাড়ি আটক করে। আমি সাজেন্ট পুলিশকে অনুরোধ করি সিজারের রোগী ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কেন আটক করা হয়েছে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- বেশি কথা বললে পাঁচ হাজার টাকার মামলা দশ হাজার হবে। এমন করে ৫-৬টি গাড়ি আটক করে প্রত্যেককে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকার মামলা দেওয়া হয়। আমরা সকল চালকরা কিসের মামলা জানতে চাইলে বলে দেবীদ্বারের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে। পরে আমরা সকল চালকরা গাড়ি নিয়ে এখানে অবস্থান ও সড়ক অবরোধ করি।

সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক ইদ্রিস ও তাজুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন জানান- চান্দিনা সিএনজি স্ট্যান্ড ইজারাদার কাজী সুমনের কাছ থেকে আমরা প্রতি মাসে ছয়শত টাকা দিয়ে ট্রাফিক ও থানাপুলিশের নামে একটি টোকেন ক্রয় করি। তবুও কেন ট্রাফিক পুলিশ বারংবার আমাদের গাড়ি আটক করে মামলার নামে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমরা সিএনজি চালিয়ে কোনো রকম সংসার চালিয়ে যাচ্ছি, এতো টাকা আমরা কোথা থেকে কিভাবে দেব? উপজেলার প্রতিটি সিএনজি স্টেশনে একইভাবে এই টোকেন বাণিজ্য চলছে। তাই টোকেন বাণিজ্যের নামে পুলিশের এ হয়রানি ও চাঁদাবাজী যতক্ষণ বন্ধ না হবে ততক্ষণ এসপি (সার্কেল) অফিস ঘেরাও এবং রাস্তা অবরোধ থাকবে। পরবর্তীতে সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি দেবীদ্বার (সার্কেল) শাহ মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান এবং ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ইকবাল হোসেন রোবেল ও চান্দিনা সিএনজি স্ট্যান্ড ইজারাদার কাজী সুমনসহ একাধিক চালকের উপস্থিততে সংক্ষিপ্ত এক বৈঠক শেষে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে বলে চালকদের আশ্বস্ত করা হয়। প্রায় সোয়া ৩ঘন্টা অবরোধের পর এএসপি শাহ মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান'র আশ্বস্ততায় চালকরা তাদের অবরোধ তুলে নেয়।

দেবীদ্বার ট্রাফিক পুলিশের টিআই তারিকুল ইসলাম বলেন- আমরা ট্রাফিক পুলিশের নিয়ম অনুযায়ী রাস্তায় যানবাহনের কাগজপত্রসহ সবকিছু চেক করি। সঠিক কাগজপত্র না থাকলে আটক করে মামলা দেই। চাঁদাবাজীর বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সিএনজি চালকরা ট্রাফিক পুলিশের নামে ইজারাদারদের কাছ থেকে ক্রয় করা টোকেনের বিষয়ে আমরা জানি না।

অভিযোগের বিষয়ে দেবীদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন- দেবীদ্বার থানা কোনো টোকেন বানিজ্য করেনা, এবিষয়ে আমি সোচ্চার আছি। যদি থানার নাম করে কেউ টোকেন বানিজ্য করে থাকে তাকে ধরিয়ে দিলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি দেবীদ্বার (সার্কেল) শাহ মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান বলেন- ট্রাফিক পুলিশ তাদের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছিল। তবে চাঁদাবাজী ও হয়রানী বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার বিষয়ে চালকদের সাথে কথা হয়েছে। খুব দ্রুত সমস্যার স্হায়ী সমাধান করা হবে।

No comments