নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে দার্শনিক, ডাক্তার ও একজন ইংরেজের বক্তব্য - Sokalerkotha -->

Breaking News

নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে দার্শনিক, ডাক্তার ও একজন ইংরেজের বক্তব্য


আমরা মনে করি বিজ্ঞান মানুষকে নতুন কিছু প্রতিনিয়ত দেখাচ্ছে,  কিন্তু না বিজ্ঞানীরা আজ যা আবিষ্কার করছে তা ১৪৫০ বছর আগের কুরআনে তার মূল তত্ব দেওয়া আছে। আসলে আমরা উপলব্ধি করতে দেরি করেছি। তেমনি নামাজকে আমরা আগে মনে করতাম শুধুমাত্র ইবাদত, কিন্তু বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে এটা একটি উচ্চতমানের ব্যায়াম। যা শরীরকে সবসময় সুস্থ রাখে।

নিচে  দার্শনিক,অভিজ্ঞ ডাক্তার ও একজন ইংরেজ এর বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

★ রিভরান লীবান 

তিনি নামাযের ফযীলতের ব্যাপারে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন :

আমি কয়েকবার খ্রিস্টীয় ও ইহুদীদের নামাযের সাথে মুসলমানদের নামাযের তুলনা করেছি। অবশেষে প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামী নামায উত্তম। আমি উপলব্ধি করেছি যে, ইসলামী নামায কয়েক নামাজের সমষ্টি। এর মধ্যে আল্লাহর প্রশংসা, পবিত্রতা ও গুণকীর্তন ছাড়াও এক স্বর্গীয় আকাঙ্ক্ষাও রয়েছে। ইসলামী নামাযে আরো একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা হলো এই যে, এর মধ্যে কুরআন তিলওয়াত, রুকু, সিজদা এবং তাশাহহুদ রয়েছে তার মধ্যে কাকুতি মিনতি এবং আশ্চর্য ধরনের আধ্যাত্মিক শক্তির ওপর কান্না কাটিও রয়েছে।

আমি বেশিরভাগ জুমুআর দিন আলেক্সান্দ্রার জামে মসজিদে শুধু ইসলামী নামাযের অবস্থা দেখার জন্য যেতাম। আমি যখন খতীবের জোশে ভরা বক্তৃতা, কাতারগুলোর ধারা, রুকু, সিজদার গুরুত্ব এর ওপর চিন্তা করি তখন আমার অন্তরের ওপর আশ্চর্য রকমের প্রভাব পড়ে যা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আমি বুঝতে পেরে ছিলাম যে, ইসলাম আমাকে আহবান করছে এবং তার ইবাদতের পূর্ণ পদ্ধতি আমার আত্মার ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে।


★মিস্টার এম. কিং

মানুষ প্রকৃতিগতভাবে এ কথায় চলে যে, যখন দুনিয়াবী কাজ এবং সামগ্রিক আনন্দে লিপ্ত থাকে তখন আত্ম সংশোধন বিষয় খেয়াল থাকে না এবং কিছু কিছু আনন্দের আবশ্যকীয় ফল এই যে, মানুষ স্বীয় স্রষ্টার স্মরণ থেকে গাফেল হয়ে যায়। 

ঐ অবস্থায় যখন আমরা (মিস্টার এম. কিং) এ কথার ওপর চিন্তা করি যে, ইসলাম স্বীয় অনুসারীদের ওপর দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করেছেন এবং তাদের বাধ্য করেছে যে, সর্বাবস্থায় স্বীয় ফরজ আদায় করবে, তো আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, নামায এক উত্তম প্রকারের হেদায়াত।

"যখন সত্য বিশ্বাসের অনুসারী কোনো ব্যক্তি (মুসলমান সকল দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে) একনিষ্ঠ ও মুহাব্বতের সাথে স্বীয় স্রষ্টা ও মালিককে স্মরণ করে, তার গুণকীর্তন ও পবিত্রতার ঘোষণা করে তাঁর সন্তুষ্টি চায় এবং এই ক্ষমতাশালী ও পবিত্র . সত্তা থেকে সাহায্য চায় তখন তাঁর আত্মা নিশ্চিতই এক পবিত্র অবস্থায় পৌঁছে যায়, এবং তার দিল ও দিমাগ থেকে ব্যক্তি পূজার মোহ দূর হয়ে যায়।”

আমি উচ্চ স্তরের মুসলমানদের দেখেছি যে, সে স্বীয় প্রভাব ও মর্যাদার কারণে এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য রাখেন এবং কম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোক তাদের সঙ্গে কথা বলার হিকমত রাখে না। অথচ যখন নামাযের সময় হয় তখন একজন বিশাল মর্যাদাশালী ব্যক্তি অনাড়ম্বর মসজিদে প্রবেশ করেন এবং তার অপরিচিত ভাইদের সাথে মিলে ইমামের নেতৃত্বে ফরজ নামাজ আদায় করে। এ দৃশ্য থেকে একথা প্রকাশিত হয় যে, এই ইবাদতের মধ্যে নিষ্ঠতা ও রিক্ততার শিক্ষা রয়েছে এবং এর মধ্যে সমতার মর্যাদা দৃশ্যমান হয়।

সমতার বড় ঘটনা এই যে, ইসলামের রাসূল মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ আশ্চর্যজনকভাবে আমীর-ফকীর এবং ছোট-বড়কে এক সারিতে সমবেত করেছেন এবং উপযুক্ত পরিমাণে নিঃস্ব ও অহংকারকে যাদুকরীভাবে পাশাপাশি করে দেখিয়েছেন। আমি স্বীকার করে নিয়েছি যে, নামায একটি উত্তম ইবাদত।”


★রোগ বিশেষজ্ঞ

এক পাকিস্তানী যিনি হার্টের রোগ আক্রান্ত ছিলেন তিনি চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া গেলেন। ওখানে এক বড় বিখ্যাত অভিজ্ঞ হার্টের ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে কিছু ওষুধ দিলেন। সাথে আট দিনের জন্য তিনি নিজে ফিজিও ওয়ার্ডে বিশেষভাবে ডাক্তারের উপস্থিতিতে ব্যায়াম করার নির্দেশনা দিলেন। এ ব্যায়াম খুশু খুযুর সাথে নামাজের মতো ছিল। রোগী উপযুক্ত পদ্ধতিতে ব্যায়াম করতে থাকলে ডাক্তার বললেনঃ

আপনিই প্রথম রোগী যিনি এত শীঘ্রই সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করছেন। অন্যথায় আট দিনে তো রোগী শুধু ব্যায়ামের পদ্ধতিই শিখে থাকে : মুসলমান রোগী বললেন :

আমি মুসলমান এবং এ পদ্ধতি সম্পূর্ণ আমাদের নামাযের মতই।” এ কথা শুনে ডাক্তার আট দিন বাদ দিয়ে অন্য দিন এই মুসলমান রোগীকে কিছু ওষুধ দিলেন এবং ঐ ব্যায়ামের নির্দেশনা দিয়ে ছুটি দিয়ে দিলেন।

★একজন ইংরেজঃ

এক মুসলমান ইউরোপে নামায আদায় করছিলেন তখন এক ইংরেজ ব্যক্তি, দাঁড়িয়ে একে দেখতে থাকেন। যখন তিনি নামায সমাপ্ত করলেন তখন ইংরেজ জিজ্ঞেস করলেন :

“তুমি কোন কিতাব থেকে এই ব্যায়ামের পদ্ধতি শিখেছ? আমিও আমার পুস্তকে ব্যায়ামের এই পদ্ধতি বর্ণনা করেছি এবং এই পদ্ধতিতে ব্যায়ামকারী দীর্ঘ জটিল ও কঠিন কষ্টকর রোগ থেকে সর্বদা বেঁচে থাকবে। যদি দাঁড়ানো ব্যক্তি ব্যায়াম রত অবস্থায় সোজা নিচে সিজদায় চলে যায় তবে এর দ্বারা স্নায়ু ও হার্টের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে, এজন্য আপনি যেমন (রুকু) করলেন আমিও আমার পুস্তকে এরূপ লিখেছি এবং আমি এও লিখেছি যে, প্রথমে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করবে। এর মধ্যে হাত বেঁধে রাখবে। অতঃপর (রুকুর ন্যায়) ঝুঁকে হাত এবং কোমরের ব্যায়াম করবে। এরপর মাথা জমীনে রেখে ব্যায়াম করবে। এ ধরনের ব্যায়াম শুধু অভিজ্ঞদের কথায়ই রয়েছে। সকল লোক এর সৌন্দর্য সম্পর্কে জানে না। আপনি এই ব্যায়াম কার কথার ওপরে করেছেন?

ঐ মুসলমান বলতে থাকলেন,,

আমি মুসলমান। আমার দ্বীনে ধর্মীয় বিধানে নির্দেশ রয়েছে এরূপ করতে, আমি আপনার পুস্তক দেখিও নি। আমরা মুসলমানগণ আজ থেকে চৌদ্দশত বছরের বেশি সময়ব্যাপী আমাদের নবী কারীম-এর প্রদর্শিত এই আমল প্রত্যহ নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বার করি । ইংরেজ এ কথা শুনে অভিভূত হয়ে গেলেন এবং এই মুসলমানদের নিকট থেকে অধিক জ্ঞান হাসিল করতে থাকলেন ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিক ভাবে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন। (আমিন)


এস এম রবিউল ইসলাম 

অধ্যায়নরত ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, টংগী সরকারি কলেজ, গাজীপুর

No comments